প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে মোহাম্মদপুর এলাকায় বসিলা পয়েন্টে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু (তৃতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু) উদ্বোধনকালে একথা বলেন।
এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত, উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
৭০৮ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার চওড়া এবং বসিলা পয়েন্টে ১ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ রোড ও ওয়াশপুর পয়েন্টে ১ দশমিক শূন্য ৫ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়কসহ সেতুটি নির্মাণে ৮৪ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
সেতুটি নির্মাণে সরকার ৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) ৪৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা দিয়েছে। এই সেতুটি ঢাকা মেট্রোপলিটন মহানগরীকে পশ্চিম দিকে সমপ্রসারণ করার পথ উন্মুক্ত করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সড়ক ও নৌপথে সুষ্ঠু যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত এবং নগরীতে যানজট নিরসন করে বর্তমান আধুনিক বিশ্বে ঢাকাকে একটি সুন্দর মেগাসিটিতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং মহানগরীর ওপর চাপ কমাতে উঁচু এঙ্প্রেসওয়ে, মেট্রো রেল ও রাজধানীর চারপাশে চক্রাকার নৌপথ নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
চক্রাকার নৌপথ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি বলেন, 'আমরা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও রাজধানীর চারপাশের নদীগুলো পরিস্কার করার পদক্ষেপ নিয়েছি।'
তিনি আরো বলেন, লোকজনের নির্মল বায়ু সেবন ও নির্ঝাঞ্ঝাটে হাঁটাহাঁটি করার সুবিধার্থে এসব নদীর উভয় তীরে পায়চলা পথ তৈরি করা হবে।
বহু কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুর অবকাঠামো নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বানের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু এবং ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে চলছে। ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, এছাড়া পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সেতু স্থানে উপস্থিত হলে এলাকার হাজার হাজার লোক তাঁকে অভিনন্দন জানান। সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা শ্লোগান দিয়ে ও হাত নেড়ে তাকে অভিনন্দন জানান।
সন্তোষ প্রকাশ করে সহাস্যে শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে কেরাণীগঞ্জসহ ঢাকার পশ্চিমাংশের জনগণের দীর্ঘ কাঙ্ক্ষিত দাবি পূরণ হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সেতু ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে কেরাণীগঞ্জসহ ঢাকার পশ্চিমাংশে বসবাসকারী হাজার হাজার লোকের যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এ সেতু নির্মাণের ফলে বেকার হয়ে পড়া নৌকার মাঝিদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে শেখ হাসিনা এর পশ্চিম অংশে যান এবং পূর্ব অংশে ফেরার পথে তিনি তার গাড়ী থেকে নেমে কিছুটা পথ হেঁেট আসেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস